লক্ষ্মীপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৭ টায় নজরুল একাডেমি লক্ষ্মীপুর শাখার উদ্যোগে, লক্ষ্মীপুর মিডিয়া সেন্টারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম উদ্দিন নিজামীর সভাপতিত্বে, কবি এস এম জাহাঙ্গীর এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মাঈন উদ্দিন পাঠান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কবি মুজতবা আল মামুন, অধ্যাপক কার্তিক সেন গুপ্ত, মো. শহিদ উল্লাহ, মো. নজিব উল্লাহ, বেলায়েত হোসেন (ভিপি) ও কবি শহীদুল ইসলাম পাটওয়ারী।
বক্তারা বলেন, ¯্রষ্টার প্রেম ও সৃষ্টির প্রতি অগাধ ভালোবাসা কবি জীবনের স্বার্থকতা। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি। প্রেম, দ্রোহ, সাম্য ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতা ও গানে শোষণ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন ইতিহাস থেকে জানাগেছে ১৯২৬ অথবা ২৭ সালে কবি লক্ষ্মীপুরে আগমন করে টাউন হলে রাত্রি যাপন করেন তাই, ৯০’র দশকে জেলা পরিষদ কর্তৃক শহরের বাজার ব্রিজ থেকে দক্ষিণ তেহমোহনী পযন্ত সড়কটি কবির নামে নাম করণ ও টাউন হলের সন্মুখে একটি স্মৃতি পলক করার সিদ্ধান্ত হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। লক্ষ্মীপুরে জাতীয় কবির আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে এ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান তারা।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেনি চৌধুরী শাকিক, টিংকু রঞ্জণ পাল, এড. ফখরুর ইসলাম জুয়েল, সাংবাদিক মতিউর রহমান, গাজী মমিন সহ নজরুল অনুরাগী বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন।
উল্লেখ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট শোকের মাসে, ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) তিনি ইন্তেকাল করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন প্রিয় কবি।
.
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: